প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনে উড়োজাহাজ ও সামরিক হেলিকপ্টারের ভয়াবহ দুর্ঘটনার জন্য জো বাইডেন ও বারাক ওবামা সরকারের কর্মী-বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি (ডিইআই) নীতিকেদায়ী করেছেন। সংঘর্ষে আরোহী ৬৭ জনের সবাই মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারী) ট্রাম্প এ মন্তব্য করেন। তদন্তকারীরা বলেছেন, মাঝ আকাশে আমেরিকান এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ও সেনাবাহিনীর ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের মধ্যে সংঘর্ষের পেছনের কারণ উদ্ঘাটনে তাদের সময় লাগবে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড (এনটিএসবি) বলেছে, উড়োজাহাজটির ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (সাধারণত ব্ল্যাক বক্স নামে পরিচিত) ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সরকারি সংস্থাটি এএফপিকে বলেন, রেকর্ডারগুলো পর্যালোচনার জন্য এনটিএসবির গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, রিগ্যান ন্যাশনাল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ টাওয়ারে জনবল ছিল কম। ওই বিমানবন্দরেই উড়োজাহাজটি অবতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে।
কেন্দ্রীয় বিমান প্রশাসনের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার জট সামলানোর জন্য নিয়ন্ত্রণকক্ষে দুজন নিয়ন্ত্রক থাকেন। কিন্তু ঘটনার দিন সেখানে শুধু একজন দায়িত্ব পালন করছিলেন।
উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টারের মধ্যে সংঘর্ষের পর রাতের আকাশে একটি স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়। সংঘর্ষের পর উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টার বরফে ঢাকা পটোম্যাক নদীতে আছড়ে পড়ে। ফলে অন্ধকার ও ঠান্ডার মধ্যে উদ্ধারকাজ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, অন্তত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টারে থাকা ৬৭ জন আরোহীর কেউ বেঁচে নেই বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে ট্রাম্প এ দুর্ঘটনার পর একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তিনি এ দুর্ঘটনার জন্য পূর্ববর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও বারাক ওবামার ডিইআই নীতির সমালোচনা করেন। ডিইআই অনুসরণ করার জন্য বিমান সংস্থাগুলোয় যোগ্য কর্মীদের তারা আসতে দেননি বলে অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, তারা আসলে একটি নির্দেশনা নিয়ে এসেছিল। সেটা হলো ‘অত্যধিক শ্বেতাঙ্গ’। ট্রাম্প এরপর বলেন, আর আমরা যোগ্য লোকেদের চাই।
উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর বাইডেন প্রশাসনের পরিবহনবিষয়ক মন্ত্রী পিট বুটিগিগকে লক্ষ্য করে ডিইআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যাপক পরিসরে কথা বলতে শুরু করেন।
ট্রাম্প পরিবহন খাতে তার বৈচিত্র্য নীতির সমালোচনা করেন। একই সুরে কথা বলেন ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং নতুন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ। তারা বলেন, ডিইআই নীতির কারণে সক্ষম মার্কিনরা দায়িত্বশীল চাকরিতে পিছিয়ে পড়ছেন।
এ দুর্ঘটনার জন্য কর্মক্ষেত্রে ডিইআই নীতি দায়ী কি না সাংবাদিকদের আবারও এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি হতে পারে।’