‘কুকুরের পেটে ঘি সহ্য হয় না’, সত্যিই কি তাই?
‘কুত্তার পেটে ঘি সয় না’ বা ‘কুকুরের পেটে ঘি সহ্য হয় না’। প্রবাদ বাক্যটি ছোটবেলা থেকেই কমবেশি প্রায় সবাই শুনেছেন নিশ্চয়! আর সমাজের বহু মানুষ বিশ্বাস করে এটা সত্যি সত্যিই ঘটে।
বিষয়টি প্রতি গুরুত্ব দিয়ে দিল্লির যমুনা বিহার এলাকার হ্যারি পেটস ক্লিনিক অ্যান্ড সার্জারি সেন্টারের পশু চিকিৎসক হরভাতর সিং বিস্তারিত আলোচনা করেছেন-
পশু চিকিৎসক হরভাতর সিং বলেন, সেই ছোটবেলা থেকেই কমবেশি প্রায় সবাই শুনেছেন যে, কুকুরের পেটে ঘি সহ্য হয় না। বহু মানুষ বিশ্বাস করে এটা সত্যি সত্যিই ঘটে। তবে কয়েকটি প্রবাদের পেছনে কিছু বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। সেই কারণে এই প্রবাদগুলোকে সত্য বলেই বিশ্বাস করে মানুষ।
ফলে যারা মনে করেন যে, কুকুরকে ঘি খাওয়ালে তা কুকুরের জন্য ক্ষতিকর হবে, তাদের আসল সত্যিটা জানা উচিত। আর সত্যিটা জানলে মাথায় হাত পড়ে যাবে। তাহলে বলা যাক, কুকুররা আদতে ঘি হজম করতে পারে কি না।
আরও পড়ুন: ঘাসের তৈরি ঝুলন্ত সেতু, প্রাকৃতিক দুর্যোগেও থাকে নিখুঁত
দিল্লির যমুনা বিহার এলাকার হ্যারি পেটস ক্লিনিক অ্যান্ড সার্জারি সেন্টারের পশু চিকিৎসক হরভাতর সিংকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এটা একেবারেই ঠিক নয়। তার মতে, কুকুরদের মেটাবলিজম দুর্দান্ত। ফলে তারা সহজেই মাংস এবং হাড় হজম করে ফেলে।
তাই এটা বলা ঠিক হবে না যে, কুকুরদের পাচনতন্ত্র ঘি হজম করতে পারে না। যদিও প্রচুর পরিমাণে কুকুরকে কিছু খাওয়ানো হলে তা তাদের জন্য ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। এমনিতে কুকুররা মাংসাশী প্রাণী। ফলে তারা সহজেই মাংস হজম করে ফেলতে পারে।
পশু চিকিৎসকের মতে, এই প্রবাদটা সাধারণত মানুষের জন্যই ব্যবহৃত হয়। তা-ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের দিক থেকে। অবশ্য কুকুরের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। আজ পর্যন্ত গবেষণায় এই প্রমাণ মিলেছে যে, কুকুরদের স্বল্প পরিমাণ ঘি খাওয়ানো হলে তার ব্যাপক উপযোগিতা রয়েছে।
অনেকেই বিশ্বাস করেন যে, ঘি মাখানো রুটি কিংবা ঘিয়ের তৈরি অন্যান্য খাবার খাওয়ালে কুকুর অসুস্থ হয়ে পড়বে কিংবা মারা যাবে। তাদের এই ধারণা একেবারেই ভুল। যদিও এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে, কুকুর এবং বিড়ালের দেহে উচ্চ প্রোটিনের চাহিদা থাকে। এই পরিস্থিতিতে তাদের মাংস এবং ডিম খাওয়ানো হয়।
কিন্তু কুকুরদের কি সয়াবিন এবং চিজ খাওয়ানো উচিত? যারা নন-ভেজ খাবার খান না, তারা তাদের কুকুরকে সয়াবিন এবং চিজ খাওয়ান। তবে মনে রাখা আবশ্যক যে, অতিরিক্ত পরিমাণে কোনো কিছুই খাওয়ানো উচিত নয়।
কুকুরের প্রজাতি এবং তাদের কার্যকলাপের ওপর ভিত্তি করে ডায়েট চার্ট তৈরি করা উচিত। এই পরিস্থিতিতে যদি বাড়ির পোষ্য কুকুরের খাবার নিয়ে বিভ্রান্তি থাকে, তাহলে পশু বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া যেতে পারে।